টানলো না টান!
সুনির্মাতা হিসেবে নাম করেছেন রায়হান রাফি। একের পর এক ছবি বানিয়েছেন। গত বছর ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প সিরিজের জন্য নির্মাণ করেছিলেন ‘অথবা প্রেমের গল্প’। চমৎকার, গোছানো প্রোডাকশন ছিল। বিশেষ করে লোকেশন ছিল দেখার মত।
তবে তার নতুন ছবি ‘টান’ সেভাবে টানলো না। প্রথমত গল্পের দূর্বলতা, দ্বিতীয়ত প্রচুর বলিউডি প্রভাব। লাইটিং, ফ্রেমিং, কস্টিউম সবকিছুতেই বলিউডের প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে।
অভিনয়ে সিয়াম কিছু করার চেষ্টা করেছে কিন্তু স্ক্রিপ্টে তার তেমন গুরুত্ব ছিল না। অনেকটা ক্যাটরিনা কাইফের মত। ক্যাটরিনার তবু আইটেম সং থাকে, সিয়ামের তাও ছিল না। আর বুবলির পাশে সিয়ামকে বয়সে বেশ ছোট লেগেছে। দেখে মনে হয়েছে, গাল্লি বয় এর রণবীর সিং আর উড়তা পাঞ্জাবের শহিদ কাপুর এর চরিত্রের ছায়া অবলম্বনে সিয়ামের চরিত্রটি সাজানো হয়েছে।
বু্বলি চেষ্টা করেছেন নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে তুলে ধরার। ‘শাকিব খানের নায়িকা’ থেকে তিনি অভিনেত্রী হয়ে ওঠার চেষ্টা বেশ কয়েক বছর ধরেই করছেন। কিন্তু আবারও সেই স্ক্রিপ্ট। দূর্বল স্ক্রিপ্টের কারণে বুবলি চেষ্টা করলেও ভালো কোন ফল হয়নি। মনে রাখার মত কিছু তিনি করতে পারেননি। বুবলির চরিত্রটা কিছুটা গাল্লি বয় এর আলিয়া ভাটের আদলে তৈরি করা মনে হয়েছে।
অভিনয়টা একমাত্র ঠিকঠাক করেছেন সোহেল মন্ডল। যদিও তার চরিত্রেও বলিউডি ছাপ প্রবল। দেখে মনে হয়, কিছুটা এক ভিলেন এর রিতেশ দেশমুখ, কিছুটা কাহানি এর বব বিশ্বাস, কিছুটা পাতাললোক এর হাতোড়া ত্যায়াগি আর কিছুটা বদলাপুর এর বরুন ধাওয়ান এই চারে মিলে সোহেল মন্ডলের চরিত্রটি তৈরি। তারপরও সোহেল মন্ডল গল্পে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি অল্প সময়ের জন্য আসলেও সিয়াম-বুবলির চেয়ে অনেক ভালো অভিনয় করেছেন।
ছবিটির ডাবিংয়ে সমস্যা ছিল। সিয়ামের ডায়লগ প্রায় সময়ই অস্পষ্ট ছিল।
পুরান ঢাকার অ্যাস্থেটিক ভিউ যথারীতি এসেছে, যার শুরুটা হয়েছিল ‘আয়নাবাজি’ থেকে। এখনো এই বৃত্ত থেকে বের হওয়া হলো না আমাদের।
শেষে একটাই কথা, নির্মাতা হিসেবে রায়হান রাফি ভালো। তিনি সিনেমা বানানোর ফর্মুলাটা জানেন। ‘টান’, একটা ওয়েল মেড ফিল্ম হতে পারতো। কিন্তু গল্প এবং চিত্রনাট্যের দূর্বলতা আর অতিরিক্ত বলিউডি প্রভাবের কারণে ‘টান’ শেষ পর্যন্ত একটা ওয়েল মেড গার্বেজ-ই হয়েছে!