অমর সিং চমকিলা (২০২৪)
হোয়াট আ স্টোরি! হোয়াট আ লাইফ!
পাঞ্জাবি লোকগানের শিল্পী অমর সিং চমকিলার বায়োপিক নির্মাণ করেছেন ইমতিয়াজ আলী। এর মাধ্যমে বহুদিন পর ইমতিয়াজকে ফিরে পেলেন দর্শকেরা।
ইমতিয়াজের ছবি মানেই একটা চমৎকার ফিলোসফিকাল জার্নি। মাঝের ‘জাব হ্যারি মেট সেজাল’ এবং ‘লাভ আজকাল টু’ যেমন দর্শকদের আপসেট করেছে তেমনই নির্মাতা নিজেও মনে হয় আপসেট হয়েছিলেন।
তাই তো দীর্ঘ বিরতির পর আবার তার ফেরা। আর ফেরাটাও হয়েছে মনে রাখার মতো। এই ইমতিয়াজকেই খুঁজছিলেন দর্শকরা।
পাঞ্জাবি লোকসঙ্গীত শিল্পী চমকিলা যেমন জনপ্রিয় ছিলেন, তেমনই ছিলেন বিতর্কিত আর সে কারণেই ২৭ বছর বয়সে ঘাতকের বুলেটে প্রাণ হারাতে হয় তাঁকে।
১৯৭৯ সালে শুরু তাঁর গানের জগতে পথচলা আর শেষ ১৯৮৮ তে। এই নয় বছর চমকিলা জমিয়ে রেখেছেন পাঞ্জাবের মানুষকে।
আজ পর্যন্ত পাঞ্জাবে সর্বোচ্চ রেকর্ড বিক্রি হয়েছে যে শিল্পীর তিনি অমর সিং চমকিলা।
নিচু বর্ণের শিখ ছিলেন, দারিদ্র্যতার মধ্যে বেড়ে উঠেছেন কিন্তু আসলে জন্ম থেকেই ছিলেন একজন শিল্পী। তাই সব বাঁধা অতিক্রম করে গানকেই জীবনের অংশ করে নিয়েছিলেন তিনি। ডুবে থাকতেন কথা আর সুরের জগতে। তাঁর গানের কথা, সুর, গায়কী মানুষকে ছুঁয়ে গেছে।
অশ্লীলতার অভিযোগ ছিল তাঁর গানের বিরুদ্ধে। তারপরও মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। মানুষ আসলে যা শুনতে চেয়েছে তিনি তাই শুনিয়েছেন।
খালিস্তানপন্থীদের হুমকির মুখে ধর্মীয় গান লেখা ও গাওয়া শুরু করেন এক সময়। সেগুলোও জনপ্রিয় হয়। কিন্তু মানুষ তার কাছে শুনতে চাইতো সেইসব গান যেগুলো তাদের পছন্দ।
ফলে সব ভয় ঝেড়ে ফেলে মঞ্চে শ্রোতাদের পছন্দের গানই পরিবেশন করতে থাকেন চমকিলা। যার শেষ পরিণতি হয় আততায়ীর বুলেটে প্রাণ দিয়ে।
চমকিলার গানের সঙ্গী ছিলেন অমরজোত। চমকিলার দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনিও স্বামীর সাথে একই পরিণতি বরণ করেন।
কিন্তু চমকিলার কণ্ঠ থামেনি। আজও পাঞ্জাবের মানুষের মুখে মুখে বেজে ওঠে চমকিলার গান।
ইমতিয়াজের এই ছবির মাধ্যমে চমকিলা যেন পাঞ্জাব ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে গেলেন।
ছবির শেষ গানটা একদম পারফেক্ট ছিল। আমিতো ভেবেছিলাম ‘ভিদা কারো’ গানটা বুঝি চমকিলারই। পরে দেখলাম ইরশাদ কামিলের কথায় গানটি এ আর রাহমানের শুরু তৈরি আর গেয়েছেন অরিজিৎ সিং। এর চেয়ে ভালোভাবে হয়তো চমকিলাকে ট্রিবিউট দেয়া যেত না।