মিঠুন দেবনাথের প্রিয় পাঁচ ছবি

মিঠুন দেবনাথ একজন পেশাদার ফিল্ম এডিটর। যদিও তার অ্যাকাডেমিক লেখাপড়া লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। তবে সিনেমার প্রেমে পড়ে লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়ার হওয়া হয়নি তার। প্রথম জীবনে ছিলেন অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর। নিজে বানিয়েছেন শর্ট ফিল্ম, মিউজিক ভিডিও। ডগ্মা, সিক্সটিন নামে ফিল্ম এডিটিং হাউজ রয়েছে তার। বর্তমানে কাজ করছেন বিজ্ঞাপন, শর্ট ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজ নিয়ে। ভালো ছবির পক্ষ থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তার প্রিয় পাঁচ ছবির নাম এবং ছবিগুলো কেন তার প্রিয়।

প্রিয় ছবির তালিকা তো অনেক বড়। আর এই তালিকা প্রতিদিন-ই যেন আরো লম্বা হয়। এত এত প্রিয় ছবির মাঝে মাত্র পাঁচটা নাম বলতে গেলে তো আসলেই বিপদে পড়তে হয়। তবু এই মুহূর্তে যে নামগুলো মাথায় আসছে বলে ফেলি।

১. অপুর সংসার, সত্যজিৎ রায়

২. দ্য লাস্ট লিয়ার, ঋতুপর্ণ ঘোষ

৩. বিউটিফুল, আলেহান্দ্রো গনজালেস ইনারিত্তু

৪. উজাক, নুরী বেলগী জিলান

৫. ব্যাড গাই, কিম কি দুক

পাঁচটা ছবিতেই একটা কমন বিষয় আছে, মানবিক সম্পর্ক। ব্যক্তিগতভাবে এই ব্যাপারটা আমাকে খুব বেশি টানে। মানুষে মানুষে সম্পর্কের যে কত রুপ থাকতে পারে, সম্পর্কের স্তর কত অদ্ভুত হতে পারে, এই ব্যাপারগুলা ভাবতে, সিনেমায় দেখতে আমার খুব ভালো লাগে।

‘অপুর সংসার’ আর ‘বিউটিফুল’ দুই ছবিতেই বাবা-ছেলের সম্পর্কের দুই ধরণের মাত্রা দেখা যায়। এটা আমাকে খুব আপ্লুত করে। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব আবেগী মানুষ। এখনও ইমোশনাল ছবি দেখে চোখে পানি চলে আসে!

ঋতুপর্ণ ঘোষ তো মানবিক সম্পর্কের গল্প বলার মায়েস্ত্রো। তাঁর প্রায় সব ছবিই আমার প্রিয়। বিশেষ করে ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’ এর নাম মনে হলো কারণ এই ছবির গল্পে, ছবি বানানোর একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দুজন মানুষের মধ্যকার একটা সম্পর্কের যে গল্প তিনি বলেছেন, সেরকম খানিকটা অভিজ্ঞতা আমার নিজের জীবনেও আছে।

‘উযাক’ আর ‘ব্যাড গাই’ সম্পূর্ণ তাড় ছিড়া জিনিস! এই মুহূর্তে নুরী বেলগী জিলান আমার সবচেয়ে প্রিয় ফিল্মমেকার। তাঁর এই ছবিতে এমন দুটি ভিন্ন দুনিয়ার (ভিন্ন মানসিকতা/সমাজ/ক্লাস) মানুষের মাঝের সম্পর্ক নিয়ে এত দারুণ একটা গল্প দেখিয়েছেন, যে ভাবাই যায় না!

আর কিম কি দুকের ‘ব্যাড গাই’-ও ভীষণ রকম ক্যারিশম্যাটিক। একটা সম্পূর্ণ খারাপ মানুষ কীভাবে একটা ছবির গল্পে প্রোটাগনিস্ট হয়ে জায়গা পায় এবং তার গল্পটা তার মত করে নৃশংসভাবে দেখানোটা আমাকে এখনো নাড়া দেয়।

আমার কাছে সিনেমা মানে অনুভূতি। একটা সিনেমা দেখার পর তার রেশ কতক্ষণ আমার মধ্যে থাকে, আমাকে অন্য কোন অভিজ্ঞতা দেয় বা ইমোশানালি কানেক্ট করে কিনা সেটাই আমার কাছে মুখ্য বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *