দিবেন্দু ভট্টাচার্য: চরিত্রের সাথে খেলা করেন যিনি
বলিউডের অন্যতম আন্ডাররেটেড একজন অভিনেতা।
খুব একটা পরিচিত মুখ তিনি নন, আবার একেবারে অপরচিতও নন। যদি আপনার মোটামুটি নিয়মিত ওয়েব সিরিজ, হিন্দি সিনেমা দেখার অভ্যাস থাকে তো এই চেহারাটা আপনি চেনেন। হয়তো নাম জানেন না।
বলিউডে পঙ্কজ ত্রিপাঠি, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর মত অভিনেতারা যেমন নিজেদের কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন তেমনই দিবেন্দুর মত এরকম অনেক মেধাবী অভিনেতা আছেন যাদেরকে এখনো ঠিকভাবে কাজে লাগানো হয়নি।
কাজের হিসেবে দিবেন্দু অনেক কাজ করেছেন। হিন্দি, বাংলা মিলিয়ে কম ছবিতে অভিনয় করেননি। তবে ছবিতে তার বেশিরভাগ চরিত্রের ব্যাপ্তি অনেক কম। অবশ্য কম ব্যাপ্তিতেও নিজেকে মেলে ধরতে সিদ্ধহস্ত তিনি। সেকশন থ্রি সেভেন্টি ফাইভ ছবিতেই তার প্রমান আছে। সেখানে তার চরিত্রের ব্যাপ্তি হয়তো মিনিটখানেকও ছিল না, কিন্তু নিজের চরিত্রটাকে একদম শতভাগ ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।
অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ডেভ ডি ছবি দিয়ে দিবেন্দু দর্শকদের নজরে পড়েন। সেখানে চুনিলালের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, নিজের চরিত্রের প্রতি দারুণ সুবিচার করেছেন তিনি।
এরপর ছোটখাট অনেক চরিত্রে অনেক ছবি এবং ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, আনদেখি ওয়েব সিরিজে ডিএসপি ঘোষের চরিত্র। এই চরিত্র দিয়ে অনেকেই নতুন করে দিবেন্দুকে চিনেছেন। রান লোলা রান এর হিন্দি রিমেক লুপ লাপেটা-তে ভিক্টরের চরিত্রেও অনেকে তাকে মনে রেখেছেন। ক্রিমিনাল জাস্টিস এবং আনদেখি এই দুটি ওয়েব সিরিজ তাকে অনেক বেশি পরিচিত করে তুলেছে। তবে এর আগে সিনেমাতেও রয়েছে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ার।
দিবেন্দুর অভিনয় করা প্রথম ছবি ২০০১ সালের মনসুন ওয়েডিং। মীরা নায়ার ছিলেন ছবিটির পরিচালক। এর বেশ আগে থেকেই দিবেন্দু অভিনয় করতেন। পথ নাটক করতেন। অভিনয় করবেন বলেই ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে ভর্তি হয়েছিলেন নওয়াজউদ্দিন, পঙ্কজ ত্রিপাঠিদের মতই।
যদিও পরিবার তার এই অভিনয় করাকে প্রথমে ভালোভাবে নেয়নি। বাবা চেয়েছিলেন ছেলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সিএ এরকম একটা কিছু হোক। পাশাপাশি শখের বসে অভিনয়টাও চালু থাকুক। কিন্তু দিবেন্দু চেয়েছিলেন শুধু অভিনয় করতে।
যতটা তিনি দিতে পারতেন তার অনেকটাই নেয়া হয়নি এখনো তার কাছ থেকে। চুনিলালের চরিত্রটি আমার কাছে মনে হয় তাকে বেশ ভালোভাবে তুলে এনেছিল পর্দায়। এর বাইরেও তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে মকবুল, আব তাক ছাপ্পান, হুল্লা, ব্ল্যাক ফ্রাইডে, চিটাগং, লুটেরা, খুদা হাফিজ, চ্যাপ্টার টু। বেশ কিছু বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন এখন শুধু মনে পড়ছে একটি তারার খোঁজে ছবির কথা।
টেলিভিশনে কখনো কোন অভিনয় করেননি বা বলা চলে অভিনয়ের সুযোগ পাননি। সে তুলনায় ওয়েব সিরিজে তাকে বেশি পাওয়া গেছে। অভিনয় করেছেন সেকরেড গেমস, রে, দিল্লি ক্রাইম সিজন ওয়ান, থিংকিস্তান, জামতারা, মির্জাপুর সিজন টু সিরিজগুলোতে।
অডিশন দিয়ে কাজ পাওয়ায় কখনো আগ্রহী না দিবেন্দু। তার মতে যেখানে সেখানে অডিশন দিয়ে আসলে অভিনেতার সক্ষমতা বোঝা যায় না। তাই অল্প কিছু মানুষ যারা তাকে ডাকেন তিনি তাদের সাথেই কাজ করেন, করে যাচ্ছেন।