পিকি ব্লাইন্ডার্স
১৯২০ এর দশকে ইংল্যান্ডের বার্মিহামের শহরের একটি অপরাধী গ্যাংয়ের গল্প। ছোটখাট অপরাধ দিয়ে যাদের শুরু এবং এক সময় যারা বার্মিহামের হর্তাকর্তা হয়ে ওঠে। হয়ে ওঠে শহরটির সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং সম্পদশালী পরিবার।
মূলত শেলবি পরিবার এবং এদের সহযোগীদের ডাকা হয় পিকি ব্লাইন্ডার্স নামে। এদের রয়েছে নিজস্ব পোশাক পরার স্টাইল, রীতি-নীতি এবং নিয়মকানুন।
বাস্তবে পিকি ব্লাইন্ডার্স নামে কোনো গ্যাং ছিল কিনা তা নিয়ে নানা মত আছে। কোনো কোনো সূত্র দাবি করে ছিল, কোনো কোনো সূত্র দাবি করে ছিল না।
বাস্তবে থাকুক বা না থাকুক পিকি ব্লাইন্ডার্স সিরিজের মাধ্যমে এই ফিকশনাল গ্যাংটি বেশ ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
এর প্রথম সিজনের প্রচার শুরু হয় ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এবং এখন পর্যন্ত সর্বশেষ ষষ্ঠ সিজন প্রচারিত হয়েছে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২-এ।
প্রতিটি সিজনেই ছয়টি করে এপিসোড। গড়ে প্রতিটির দৈর্ঘ্য ঘণ্টাখানেক।
পিকি ব্লাইন্ডার্স মূলত গঠিত চার শেলবি ব্রাদার্সকে নিয়ে। আর্থার শেলবি সবার বড়, তারপর থমাস শেলবি, তারপর জন এবং ফিন।
শেলবি ফ্যামিলির মূল হর্তাকর্তা মেজো ভাই থমাস শেলবি। যে কিনা একইসাথে চতুর এবং দুর্ধর্ষ। ্র
বড় ভাই আর্থার শেলবির নামে ভয়ে কাঁপে সবাই। কারণ মানুষ মারতে হাত কাঁপে না তার।
জনও বেশ ভয়ঙ্কর তবে এদের সবার থেকে আলাদা এবং বেশ ঠান্ডা স্বভাবের সবার ছোট ভাই ফিন শেলবি। তবে সেও একসময় খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়ে।
চার ভাইয়ের একটাই বোন আইডা শেলবি। যে নিজের শেলবি পরিচয় থেকে বের হতে চায় কিন্তু পারে না। ঘটনাচক্রে এই পরিবারের সাথেই থেকে যায় সে এবং শেলবি কোম্পানির একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠে।
তবে এদের সবাইকে আগলে রাখেন পলি গ্রে। এদের ফুপু। এক সময় শেলবি ফ্যামিলিতে যোগ দেয় পলির হারিয়ে যাওয়া ছেলে মাইকেল।
এদের বাইরেও আংকেল চার্লি, কার্লি, জেরেমি, জনি ডগস এরাও শেলবি কোম্পানির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
শুরুতে চাঁদাবাজি, রেসের বাজি, পাব এই ছিল তাদের কাজ। সেখান থেকে ধীরে ধীরে থমাস শেলবি কোম্পানিকে রুপান্তর করেন গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে, গড়ে তোলেন বিভিন্ন কারখানা। সেই সাথে চলতে থাকে মাদক, অস্ত্র কেনাবেচা এবং পাচারের কাজ।
এক সময় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হন থমাস শেলবি।
দীর্ঘ এই সিরিজটির ঘটনাবলী ১৯২০ এবং ৩০ এর দশকে ব্স্তিৃত। একেক সিজনে একেক ধরণের সংকটে পড়ে শেলবি পরিবার। কখনো কখনো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিবারের অনেক সদস্যকে তাদের হারাতে হয়। কখনো কখনো শক্ত প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করতে গিয়ে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে আসেন তারা।
থমাস শেলবির যে আইকনিক পার্সোনালিটি তৈরি করা হয়েছে এই সিরিজে তা অনবদ্য। লোকটার জন্য মাঝে মাঝে খারাপ লাগে আবার মনে হয় পাপের ফল তার ভোগ করা উচিত।
চমৎকার কিছু ডায়লগ রয়েছে প্রতিটি সিজনেই। কিছু কিছু সিজনে গল্পটা ধীরগতিতে এগিয়েছে। তখন কিছুটা বিরক্ত লাগে।
প্রথম সিজনে গল্পটা সবচেয়ে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিল। দ্বিতীয় সিজনেও গল্পটা গোছানো ছিল, তবে এরপর আর সেভাবে গল্পটা জমেনি, তবে দেখতে খারাপ লাগে না। প্রথম সিজনটাই সবচেয়ে জমজমাট।
যারা ক্রাইম থ্রিলার পছন্দ করেন তাদের জন্য মাস্ট ওয়াচ একটি সিরিজ।