প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি রেহানা মরিয়ম নূর
ছবিটি বেশ হতাশ করেছে। বাধন পুরো ছবিজুড়ে অতি অভিনয় করেছেন। এখনও করে চলছেন (কান থেকে শুরু হওয়া কান্নাকাটি এখনও হলে হলে চলছে)। নাক দিয়ে ফোস ফোস করে বাতাস ছাড়া, ঘন ঘন বেসিনে গিয়ে মুখে পানি দেয়া, দাত কিড়মিড় করা, জোরে জোরে দরজা ধাক্কানো আর সবাইকে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তার কাজ।
ফোনে ফোনেই ভাদাইম্মা ছোট ভাইকে দিয়ে মেয়েকে স্কুল থেকে আনার কাজ ম্যানেজ করেন । হঠাৎ একদিন আন্দোলনের মুখে কলেজে আটকা পড়ে তার ভেতর ‘লাথি মার ভাঙরে তালা, যতসব বন্দীশালা আগুন জ্বালা, আগুন জ্বালা’ স্পিরিট জেগে ওঠে। কারণ একমাত্র সেদিনই তার মেয়েকে স্কুল থেকে আনার কেউ নাই, তাকেই যেতে হবে। তাই তিনি শোয়েব আখতারের মত রানআপ নিয়ে কলাপসিবল গেটের উপর লাফিয়ে পড়েন।
কাহিনীর কোন যুক্তি নাই। যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রী অভিযোগ করবে না জানার পর রেহানা বুদ্ধি করেন তিনি গিয়ে অভিযোগ করবেন যে তাকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে, আর আসল ভিক্টিম সেই ছাত্রী হবেন রাজসাক্ষী। কিন্তু রাজসাক্ষী তো এত বোকা না, সে সাথে সাথে প্রশ্ন করে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই আমাদের মিথ্যা ধরা পড়ে যাবে! রেহানা কি কম চালাক? সে বলে, ওগুলা কাজ করে না! ব্রিলিয়ান্ট!
যার সাথে মিলে এরকম ব্রিলিয়ান্ট আইডিয়া রেহানা ক্র্যাক করলো সেই ভিক্টিমই পরে অভিযুক্তের দলে ভিড়ে রেহানার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। রেহানা তখন ফোসফোসানি বন্ধ করে ডিরেক্ট অ্যাকশনে নামে, লাগাও চড়! হাত থাকতে মুখে কেন?
কোন অবস্থাতেই এই ছবি এমন কোন পরিস্থিতি, পরিবেশ তৈরি করে না যাতে কান্না পায়। এইরকম একঘেয়ে, অতি অভিনয় করে সেই অভিনয় আবার হলে দেখে কেঁদে বুক ভাসানোর ক্ষেত্রেও বাধনের অতি অভিনয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
নীলাভ কালার টোন আর ক্যামেরার নাড়াচাড়া দুইটাই খুব বিরক্তিকর। দেখে মনে হয়েছে যে মেডিকেল কলেজে শুটিং হয়েছে সেখানে লোডশেডিং চলছে।
একটাই শুধু পাওয়া, সেটা হচ্ছে রেহানার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করা বাচ্চা মেয়েটা। এত ন্যাচারাল আর স্পন্টেনিয়াস অ্যাক্টিং করেছে বাচ্চা মেয়েটা যে বাধন বরং ওর কাছ থেকে কিছু টিপস নিতে পারেন। এই শিশুশিল্পীই ছবির একমাত্র অ্যাসেট! বাকি সব যুগের হুজুগ!