তাড়ুয়ার লেট মি আউট
নাট্যদল তাড়ুয়ার প্রযোজনা লেট মি আউট। দীর্ঘ চার বছর পর নাটকটির তিনটি প্রদর্শনী হয়ে গেল ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর, বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে।
১৯২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নাটকটি রচনা করেছেন রুনা কাঞ্চন। শত বছর হতে চললেও গল্পটি আজও আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রাসঙ্গিক। আর সেই প্রাসঙ্গিকতাকে চমৎকারভাবে মঞ্চে উপস্থাপন করেছেন নির্দেশক বাকার বকুল।
আলাদা করে নাটকটির টেকনিক্যাল দিকগুলোর কথা বলতে হয়। কস্টিউম, মেকআপ, লাইট, মিউজিক এবং সাউন্ড ডিজাইন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে। যা নাটকটিকে পরিপূর্ণ করেছে। সাউন্ড এবং লাইটের মাধ্যমে স্টেজে যে দৃশ্যপট রচনা করেছেন নির্দেশক তা অনেকদিন দর্শকদের মনে গেঁথে থাকবে।
একটা দৃশ্যের কথা না বললেই নয়। মানসিক হাসপাতালে ক্যারল ডেক্সটার যখন তার জীবনের কথা বলেন ক্রিস্টিন কলিন্সকে তখন মুহূর্তেই ফ্ল্যাশব্যাকে হাসপাতাল থেকে ক্লাবের দৃশ্য স্মুথ একটা ট্রানজিশন ঘটে।
স্টেজকে হাসপাতাল থেকে এত দ্রুত ক্লাবে রুপান্তর করা হয়েছে যে তা দর্শকদের বিস্মিত করে। ক্যারল ডেক্সটারের চরিত্রে অভিনয় করা স্বর্ণালী চৈতি এই অল্প সময়ে দুইবার কস্টিউম বদলে দুটি ভিন্ন সময়ের চরিত্রে মঞ্চে এসেছেন। একইভাবে মাইকেলের মৃত্যু এবং তার সন্তানের জন্মের দৃশ্যটাও পোয়েটিক।
অভিনয়ে মিসেস ক্রিস্টিন কলিন্সের চরিত্রে রুনা কাঞ্চন, ক্যাপ্টেন জে জে জোনস এর চরিত্রে সরকার জিয়াদ সাব্বির অনবদ্য ছিলেন। দীর্ঘ সময় তাদের মঞ্চে থাকতে হয়েছে। দুটি চরিত্রই খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের অভিনয়ও দশে দশ।
উইঙ্গার এবং বার্কি দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাক্ষ্য শহীদ। সেই সাথে ছিলেন মানসিক হাসপাতালের রোগীর চরিত্রে। চরিত্র চিত্রনে তিনি দারুণ দক্ষ।
বয়সে ছোট হলেও ভুয়া ওয়াল্টার কলিন্সের চরিত্রে অর্জন সুহৃদ খুবই চমৎকার। এত লোকের সামনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে সে খুবই সাবলীল ছিল।
ফাদার ব্রিগলেভ এর চরিত্রে স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতেও রবি ঘোষ ছিলেন উজ্জ্বল। নিজের বয়সের তুলনায় অন্তত ২০ বছর বেশি বয়সী একজন ধর্মযাজকের চরিত্রে মানানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই চরিত্রে অভিনয়ের ক্ষেত্রে। তবে সাদা চুল আর দীর্ঘ শরীর নিয়ে সে বেশ গুরুগম্ভীর ভূমিকায় মঞ্চের সকলের সমীহ আদায় করে নিয়েছে।
অভিনয় এবং টেকনিক্যাল কাজের কারণে অনেক দর্শকই নাটকটি আবার দেখতে চাইবেন।