‘পরাণ’ ছুঁয়েছে পরাণ

সিনেমা মানে বড় পর্দায় হলভর্তি মানুষের সাথে দেখা। হলের অন্ধকারে পছন্দ হলে তালি, অপছন্দ হলে গালি। বাংলাদেশে সিনেমার দুরবস্থা চলছে বেশ অনেক বছর ধরেই। হল নেই, দর্শক নেই, ভালো ছবি নেই। এবার পরাণ যেন সব মিলিয়ে দিল। হল, দর্শক আর ভালো ছবি সব মিলিয়ে জমজমাট শো!

প্রথমে ১১টি সিনেমা হলে মুক্তি পেলেও দর্শকের সাড়া পেয়ে এখন সগৌরবে ৫৫টি হলে চলছে পরাণ। ঢাকার হলগুলোতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। আগে থেকে টিকেট না কাটলে শোয়ের আগে টিকেট পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। বিশেষ করে স্টার সিনেপ্লেক্সে শুক্রবারের টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে আগেভাগেই।

শ্যামলী সিনেমা হলে রাত ৮টার শোয়ের টিকেট কাটতে হয়েছে দুপুর ২টায়। রাত ৮টাতেও হাউজফুল! কি এমন আছে পরাণে? যা দর্শককে টেনে এনেছে চুম্বকের মতো?

প্রথমত, একটি আলোচিত ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ছবিটি। সে কারণেই দর্শক আগ্রহ প্রবল। তবে সে আগ্রহে দর্শক না হয় আসলো কিন্তু ছবি মানে ২ ঘণ্টার রানটাইমে দর্শক কি পাচ্ছে?

পরাণের স্ক্রিপ্ট এবং ডায়লগ খুব ভালো। গল্পটা সবারই জানা, সেখান থেকে স্ক্রিপ্ট করাটা চ্যালেঞ্জিং। সেই চ্যালেঞ্জ বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন শাহ্জাহান সৌরভ এবং রায়হান রাফী। ভালো ভালো ডায়লগ আছে।

সবচেয়ে ভালো করেছেন অভিনেতা নাসিরউদ্দিন খান। তার ক্যারেক্টার দর্শকদের সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছে। ডায়লগ ডেলিভারি, টাইমিং, কমিক সেন্স সব অসাধারণ। পরাণে যেন নাসিরউদ্দিন নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

রাজ খুব ভালো অভিনয় করেছেন। তার চরিত্রের জন্য যে পাগলামি এবং ক্ষ্যাপাটেপনা দরকার ছিল রাজ তার শতভাগ ডেলিভারি দিয়েছেন।

মিম এবং ইয়াশ রোহানও ভালো করেছেন। বিশেষ করে মিমের কথা বলতে হয়। তার চরিত্রটির বেশ কয়েকটি বাঁক বদল রয়েছে। প্রতিটি বাঁকে তিনি চরিত্রটার প্রতি সুবিচার করেছেন।

তোজো চরিত্রে রাশেদ মামুন অপু অসাধারণ। দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন অপু। তার ডায়লগ এবং অভিনয়ে পড়েছে করতালি।

গান, সিনেমাটোগ্রাফি, এডিটিং সবই ভালো। হলে বসে দেখার ছবি। হলে বসেই দেখতে হবে। শেষে বলতে হয় পরাণ সত্যিই দর্শকের পরাণ ছুঁয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *