পারসুট অব হ্যাপিনেস (২০০৬)
মন খারাপ করা ছবি। আবার মন ভালোও করে দেয় ছবিটা। ক্রিস গার্ডনার একজন সেলসম্যান। হাইস্কুলের পর আর লেখাপড়া হয়নি। নানারকম কাজ করেছেন জীবনে কিন্তু সফল হতে পারেননি। বিশেষ এক ধরণের পোর্টেবল এক্সরে বিক্রি করেন তিনি। সেই এক্সরে নিয়েই সারাদিন ঘুরে বেড়ান। এক্সরে বিক্রি হলে তার সংসার চলবে। নাহলে দেনা বাড়বে। এর মধ্যেই বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে, ট্যাক্স বাকি। কিন্তু হাতে টাকা নেই। এ নিয়ে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য। একমাত্র ছেলে ক্রিস্টোফারের সব আবদারও পূরণ করতে পারে না সে। সব মিলিয়ে অভাবগ্রস্ত, অসুখী জীবন গার্ডনারের। তবু সে সুখের আশায়, একটু ভালো থাকার আশায় আপ্রাণ চেষ্টা করে যায়।
এক সময় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়, বাড়ি ছেড়ে দিতে হয়। পকেটে টাকা না থাকায় স্টেশনের বাথরুমে রাত কাটাতে হয় ছেলেকে নিয়ে। একটা সুযোগ, ভালোভাবে বেঁচে থাকার আশায় খুঁজে বেড়ায় সে। সুযোগ একটা আসে তবে সেটা সুযোগ নয় আসে চ্যালেঞ্জ হয়ে। ছয় মাসের একটা ইন্টার্নশিপ, যেখানে কোন বেতন দেয়া হবে না। ছয় মাসের ট্রেনিং শেষ হলে যদি নিজের যোগ্যতা প্রমান করতে পারে তাহলে স্টক ব্রোকার হিসেবে কাজ পাবে সে। বদলে যাবে তার জীবন। ২০ জন ইন্টার্নের মধ্যে থেকে শেষ পর্যন্ত চাকরি পাবে একজন। আবার সবাইকেই বাদ দেয়া হতে পারে।
যার কাছে মাত্র ২০ ডলার সম্বল, তার আর কোন উপায় থাকে না, চেষ্টা করা ছাড়া। ক্রিস তাই করে চেষ্টা। এর মধ্যে একটা-দুটো এক্সরে বিক্রি করে চলার মত কিছু টাকা পায় সে। তাই দিয়ে কোনমতে বাবা আর ছেলে চলে। প্রতিটি পয়সা গার্ডনারের কাছে মূল্যবান।
এক সময় দু:খের দিন শেষ হয় গার্ডনারের। স্টক ব্রোকারের চাকরিটা হয়ে যায় তার। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়া। এক সময় গার্ডনার নিজেই ব্রোকারেজ হাউজ দেয়। তবে নিজের জীবনের কষ্টের দিনগুলোর কথা কখনোই ভোলেনি সে।
এটা কোন গল্প নয়, সত্যি ঘটনা। মার্কিন ব্যবসায়ী ক্রিস গার্ডনারের নিজের জীবনের গল্প। তাঁর লেখা পারসুট অব হ্যাপিনেস বই অবলম্বনে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। ছবিতে ক্রিস গার্ডনারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন উইল স্মিথ। ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করেছে উইল স্মিথের ছেলে জাদেন স্মিথ।
গার্ডনারের চরিত্রের অসহায়ত্ব এবং ভালো কিছু করার দৃঢ় মনোবল উইল স্মিথ খুবই সাবলীলভাবে পর্দায় তুলে এনেছেন। যে কারো জন্যই অনুপ্রেরণাদায়ক হবে এই ছবিটি।