লাকি ভাস্কর (২০২৪)

এই ছবির যে জিনিসটা মূলত আকর্ষণ করেছে সেটা হচ্ছে নিম্ম মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী মানুষের ডেসপারেটনেস। এই বিষয়টাই সব দর্শককে দ্রুত কানেক্ট করে। আপাত নিরীহ মানুষ, সব মুখে বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে। কিন্তু যখন তার সহ্যের সীমা পেরিয়ে যায় তখনই সে হয়ে উঠতে পারে অপ্রতিরোধ্য একজন মানুষ।

ভাস্কর কুমারের এই ট্রানজিশনটা দারুণ উপভোগ্য। বারবার ঠোকর খাওয়া, প্রতিদিন যুদ্ধ করা মানুষটা একদিন এমনই ঝুঁকি নিয়ে ফেলে যাতে তারা সবকিছু শেষ হয়ে যেতে পারে। আসলে সে সেদিন বুঝতে পারে তার সবকিছু অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে হারানোর কিছু নেই তার। সেই যে শুরু, এরপর একের পর এক ঝুঁকি নিতে থাকে সে। যার একসময় দৈনন্দিন খরচ চালাতে কষ্ট হয়ে যেত, তার ব্যাংক একাউন্টে জমা পড়ে ১০০ কোটি রুপি!

ভাস্কর কুমারের চরিত্রের আরেকটা দিক ভালো লেগেছে। সে অন্তত নিজে থেকে ফুলস্টপ টেনেছে। পরিবারকে ভালো রাখার জন্যই প্রথম রিস্কটা নিয়েছিল সে। তারপর ফ্রড করে টাকা কামানো তার নেশায় পরিণত হয়েছিল। সেটাই সবার ক্ষেত্রে হয়। তবে যেটা হয় না, সেটা হচ্ছে নিজে থেকে সরে আসা। একটা জায়গায় গিয়ে থেমে যাওয়া। ভাস্কর সেটাই করে, আর করে নিজের পরিবারের জন্য।

কাহিনীতে দম আছে। বারবার মনে হয়ে ভাস্কর এবার ধরা পড়ে যাবে। বারবার সে উতরে যায়। এ কারণেই হয়তো লাকি ভাস্কর। তবে লাকের সাথে যথেষ্ট বুদ্ধিও রয়েছে ভাস্করের। ফিনান্সিয়াল স্ক্যাম নিয়ে বলিউডের বেশ কয়েকটা সিরিজ-মুভি দেখা হয়েছে। লাকি ভাস্কর সে তালিকায় অবশ্যই থাকবে। কারণ এখানে অনেকখানি জুড়ে আছে হারশাদ মেহতার ব্যাংক রিসিপ্ট এর স্ক্যাম, যেটা বিস্তারিত দেখানো হয়েছে ‘স্ক্যাম ১৯৯২’ সিরিজে।

ভাস্কর কুমারের চরিত্রে দুলকার সালমান অনবদ্য। সুমাথি চরিত্রে মীনাক্ষী চৌধুরী চমৎকার। ভাস্করের ছেলে কার্তিকের চরিত্রে ছোট্ট ঋত্বিকের অভিনয় হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

সব মিলিয়ে লাকি ভাস্কর ইন্টারেস্টিং, এন্টারটেইনিং এবং কখনো কখনো ইন্সপায়ারিংও বটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *