পাতাল লোক সিজন টু (২০২৫)

পাতাল লোক সিরিজটি অন্য সব ক্রাইম সিরিজের থেকে আলাদা এই কারণে যে এই সিরিজটার পেছনে একটা ফিলোসফি আছে। পাতাল লোক মানে আন্ডারগ্রাউন্ড, যেখানে পোকামাকড় থাকে। আমাদের মানুষদের মধ্যে যে স্তর সেখানেও এমন একদল মানুষ আছে যারা মানুষ হয়েও পোকামাকড়ের মত জীবন যাপন করেন। যারা সমাজে থেকেও নেই, যাদের কথা সমাজ ভাবে না। প্রথম সিজনে সেই পাতাল লোকের গল্প দর্শকরা দারুণ পছন্দ করেছিলেন।

সাধারণত কোনো সিরিজ জনপ্রিয় হলে দ্রুতই তার পরবর্তী সিজন চলে আসে। তবে পাতাল লোক এর প্রথম সিজনের জনপ্রিয়তার পরও দ্বিতীয় সিজন আসতে সময় লেগেছে বছর পাঁচেক। এই সময়ে জয়দ্বীপ আহলাওয়াত আরও ছবি করেছেন। তবে ইন্সপেক্টর হাতিরাম চৌধুরীর চরিত্রটা তার নামের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। এবার সেটা একদম পাকাপাকি করলেন তিনি। জয়দ্বীপ এখন দর্শকদের কাছে পরিচিত হাতিরাম চৌধুরী নামেই।

দ্বিতীয় সিজন মার্ডার মিস্ট্রি নিয়ে তবে সেটা নাগাল্যান্ডের প্রেক্ষাপটে। গল্পটা টানটান উত্তেজনার। তবে শেষদিকে গিয়ে মনে হলো খুব তাড়াহুড়ো করে একটা ইতি টানতে হয়েছে। গল্পের যে পটভূমি তৈরি করা হয়েছিল তা শুধু মার্ডার মিস্ট্রিতেই থাকেনি, ছড়িয়েছে আরও অনেক দূর। তবে সচেতনভাবেই নাগাল্যান্ডের রাজনৈতিক, ভৌগোলিক সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানে কিছুটা খামতি রয়ে গেছে। নাগাল্যান্ডের রাজনৈতিক ইতিহাস একেবারে এড়িয়ে যাওয়াটা সিরিজটাকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সিরিজের যে ফিলোসফি তার সাথে রাজনৈতিক ইতিহাসকে যুক্ত করতে পারলে সিরিজটা আরও সমৃদ্ধ হতো।

প্রত্যেকটা পর্বই চমৎকার। ধীরে ধীরে ইন্সপেক্টর হাতিরাম চৌধুরী রহস্যের জট খুলতে থাকেন। দর্শককে পথ চলতে হয় হাতিরামের হাত ধরেই। এই সিজনে গল্পে হাতিরামকে যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সেখানে অন্য চরিত্রগুলো অনেকটাই গুরুত্ব হারিয়েছে। প্রথম সিজনে বাকি চরিত্রগুলো পর্যাপ্ত জায়গা পেয়েছিল। হাতিরাম এরউপর এই নির্ভরশীলতা সিরিজটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

আশা করবো পরবর্তী সিজনে যে গল্পই হোক বাকি চরিত্রগুলোও যেন যোগ্য মনোযোগ পায়।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *