এই সময়টা বলে দেয় যে আপনি আপনার গল্পটা বলতে পারবেন: শিমুল চন্দ্র বিশ্বাস
একটি শুটিং ইউনিটে ক্যামেরার পেছনে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি হচ্ছেন প্রযোজক। ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় পেশাদার প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন শিমুল চন্দ্র বিশ্বাস। জনপ্রিয় অসংখ্য বিজ্ঞাপনের সাথে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। তবে সাধারণ দর্শক তাঁকে চিনতে পারবেন দুটি ছবির নাম বললেই! দেবী এবং হাওয়া। দুটি ছবিরই নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন শিমুল চন্দ্র বিশ্বাস। ক্যামেরার পেছনের নিভৃতচারী, পারফেকশনিস্ট এই মানুষটি নিজের কাজের বিষয়ে দারুণ ডেডিকেটেড এবং খুঁতখুঁতে। সে কারণেই নামকরা পরিচালকদের আস্থায় থাকেন তিনি।
নেপথ্যের এই মানুষটির সঙ্গে কথা বলেছেন ফাহিম ইবনে সারওয়ার।
প্র: আপনার শুরুটা কীভাবে? এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসেবে আপনার জার্নিটা সম্পর্কে জানতে চাই।
উ: আমি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পড়তে গিয়েছিলাম। সেখানেই অ্যাকাডেমিকভাবে আমার প্রথম ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডাকশনে হাতেখড়ি। ক্যাম্পাসে যে ক্যারিয়ার কাউন্সিলর ছিলেন উনি আমাকে বলেছিলেন যে, শিমুল তুমি প্রোডিউসার হিসেবে ভালো করবে। তখন থেকে ব্যাপারটা মাথায় ছিল। আমার যেহেতু ম্যানেজমেন্ট স্কিল ভালো, মেমোরিও ভালো এবং গুছিয়ে কাজ করার অভ্যাস, তো আমারও মনে হয়েছিল করা যায়। তারপর যখন বাংলাদেশে ফিরে আসলাম আমি শুরু করি অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর হিসেবে, গিয়াসউদ্দিন সেলিম এর সাথে। ওনার সাথে প্রায় বছরখানেকের মত কাজ করি নাটকের। এরপর কাজ করি বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনে, লোকেশন ম্যানেজার হিসেবে। ওখানে কাজ করতে গিয়ে রনির সাথে আমার পরিচয়। ও আগে ফেইসকার্ডে এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করতো। তো আমরা অল্প সময়েই খুব ভালো বন্ধু হয়ে যাই। রনিই আমাকে ফেইসকার্ডে নিয়ে আসে। আমি প্রথমে এডি হিসেবে জয়েন করি, তারপর চিফ এডি হিসেবে কাজ করি। যখন মনে হলো যে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে এখন প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করতে পারবো তখন কাজ করা শুরু করি।
প্র: আপনার দুটো গুনের কথা বললেন, ম্যানেজমেন্ট ভালো এবং মেমোরি ভালো। একজন এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসারের আর কি কি গুন থাকতে হয়?
উ: ম্যানেজমেন্ট স্কিল তো অবশ্যই লাগবে। খুবই পপ হতে হবে। পপ বলতে নিজে পপ না হলেও আশেপাশে পপ কালচারে কি চলছে সেটা জানতে হবে। পিক করতে হবে, রিস্ক নিতে হবে। পিক বলতে, ধরেন আপনার কাছে পাঁচটা অপশন আছে, কিন্তু ছয় নম্বর একটা অপশনও আছে যেটা কেউ ট্রাই করেনি, ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে। তো ওই অপশনটা কাজে লাগাবেন কিনা সেই সিদ্ধান্তটা নেয়ার ক্ষমতাটা থাকতে হবে।
প্র: মানে বিভিন্ন পথ থেকে একটা পথ বেছে নেয়া?
উ: হ্যা। দিনশেষে আমরা প্রোডিউসাররা তো এক ধরণের প্রোকিউরমেন্ট করি, ক্রিয়েটিভ প্রোকিউরমেন্ট, যেটাকে আমি বলতে পছন্দ করি। ধরেন কোনো একটা প্রোডাকশনের জন্য ডিওপি নিতে হবে। এখন হাতে গোনা কয়েকজন ভালো ডিওপি আছেন আমি জানি। এদেরকে নিলে ভালো হবে। কিন্তু নতুন যে ছেলেটা আছে, ওর কাজ দেখে মনে হয়েছে কিছুটা বুঝিয়ে সুঝিয়ে দিলে ও ভালো করবে। ওকে প্রজেক্টে নেয়ার সাহসটা থাকতে হবে। ওকে বলতে হবে যে, তোমাকে দিয়ে হবে। আবার যার জন্য কাজটা করছি তাকেও বোঝাতে হবে যে, এই নতুন ছেলেটাই এই কাজের জন্য বেস্ট হবে। এই যে সংযোগ ঘটানো, আমার মনে হয় এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ একজন প্রোডিউসারের। এই জায়গাগুলোতেই আসলে একজন সাধারণ ম্যানেজার আর প্রোডিউসারের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে দেয়। ক্রিয়েটিভ কলগুলো প্রোডিউসারকে নিতে হয়।
প্র: সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কি আপনার সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকে? যে খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
উ: সবসময়ই। আর্মিতে ফিল্ড অফিসার বলে একটা পজিশন আছে না যে সবসময় মাঠে থাকে, কখন কি হবে সে জানে না কিন্তু ঘটনা ঘটামাত্রই তাকে তার কাজ শুরু করে দিতে হবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রত্যেকদিনের শুটিংয়ে আমাদের এরকম অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সব যে ঠিক হয় তা না, শতকরা ৮০ ভাগ সময়ই দেখা যায় সব ঠিকঠাক থাকে। প্রোডিউসারকেই এই সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়। যদি সিদ্ধান্ত ভুল হয় তাহলে কী হবে? হয়তো ঘণ্টাখানেক সময় নষ্ট হবে। আর যদি ঠিক হয় তাহলে তো সেই এক ঘন্টা বেঁচে গেল।
প্র: এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসেবে আপনার প্রথম ছবি কোনটা ছিল?
উ: দেবী দিয়েই শুরু।
প্র: প্রথম ছবির ক্ষেত্রে আপনার চ্যালেঞ্জ কি ছিল?
উ: বড় স্কেলে কাজ করা, বড়ভাবে চিন্তা করাটা চ্যালেঞ্জ ছিল প্রথমত। সাথে আমাদের ফেসকার্ডের টিমটাই ছিল। যাদের সাথে নিয়মিত কাজ করি। কিন্তু ডিরেক্টর অনম ভাইয়ের সাথে আগে কখনো কাজ করা হয় নাই। ওনার সাথে বোঝাপড়া, ওনার টিমের সাথে বন্ধুত্ব হওয়া, এগুলো করতে একটু সময় লেগেছিল কিন্তু সবকিছু ভালোভাবেই করতে পেরেছিলাম।
প্র: দেবীতে যেহেতু আপনারা দুটো টিম একসাথে কাজ করেছিলেন ফেইসকার্ড এবং ইয়োলো, সেক্ষেত্রে আপনারা কাজগুলো কীভাবে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন?
উ: দেবীর জন্য ফেইসকার্ড মাস দুয়েক বন্ধ ছিল। জয়া আপু যেহেতু আমাদের বন্ধু মানুষ, তিনি এই ছবির প্রোডিউসার, বন্ধুত্বের খাতিরে সুমন ভাই ফেইসকার্ড দুই মাস বন্ধ করে রেখেছিলেন। আমাদের ছেড়ে দিয়ে বলেছিলেন, যাও ছবিটা করে আসো।
প্র: এটা সাধারণত তেমন একটা দেখা যায় না আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে।
উ: না, এখানে আসলে ওনাদের বন্ধুত্বটা তো বহু বছরের। সেই জায়গা থেকে এটাই স্বাভাবিক ছিল।
প্র: দেবীর পর হাওয়া। হাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার চ্যালেঞ্জ কি ছিল? লোকেশন? সমুদ্রে কাজ করাটা?
উ: না, হাওয়ার ক্ষেত্রে লোকেশনের চ্যালেঞ্জ ছিল না। কারণ আমরা জানতাম যে সমুদ্রে শ্যুট করবো। আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল অনেকগুলো। বছরের কোন সময়টা সাগর শান্ত থাকে সেটা খুঁজে বের করা, কোন সময়টায় মাছ ধরা নিষেধ, সেটা জানা। কারণ মাছ ধরা যখন নিষেধ থাকে তখন বোটের ভাড়া কম থাকে। আবার বোটের ভাড়া যখন কম থাকে তখন মাঝি পাওয়া যায় না। এইসব ক্যালকুলেশনগুলো মিলাতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে দেখা গেল অক্টোবর-নভেম্বরের সময়টা আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। নৌকাটা খুঁজে বের করাটা আমাদের জন্য বেশ ঝামেলার ছিল । নৌকার জন্য আমরা ছয় থেকে আট মাস বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন টিম নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি। আমি নিজে গিয়েছি বরিশাল, পটুয়াখালি, চর কুকরি মুকরি ওই দিকটায়। বাবলু মামা, শিবলু ভাই এরা গিয়েছেন সুন্দরবন, খুলনার দিকে। নৌকাটা পেতেই আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।
প্র: নৌকার জন্য এত ঘোরাঘুরি কেন করতে হয়েছিল?
উ: আমাদের এমন একটা নৌকা দরকার ছিল যাতে ১০০ জন মানুষ একসাথে থাকতে পারে। নৌকাটা ভারি হতে হবে, যাতে দৌড়াদৌড়ি করা যায়। আবার নৌকাটা আমাদের মত করে মোডিফাই করতে হবে। সব মালিক তো নৌকা মোডিফাই করতে দেয় না। এত বড় নৌকা পাওয়া যায় না। আমাদের আবার কাঠের বডির নৌকাই লাগবে। এসব হিসাব নিকাশ করেই নৌকাটা খুঁজে বের করতে হয়েছে।
প্র: শুটিংয়ে আপনার কয়টা নৌকা ব্যবহার করেছেন?
উ: আমাদের শুটিংয়ের মূল নৌকা তো একটাই ছিল, যেটাতে শুটিং হয়েছে। সাপোর্টিং বোট আরো কয়েকটা ছিল। পাশে একটা ছোট বোট ছিল যেটাতে আমরা রান্নাবান্না করতাম। রান্নাবান্না বলতে টুকটাক স্ন্যাকস, চা-কফি, ডিম ভাজা এইসব আর কি। আরেকটা থাকতো সার্ভিস ট্রলার যেটা আমাদেরকে তীর থেকে আনা নেওয়া করতো। মোটামুটি তিনটা বোটেই আমাদের কাজ হয়ে গেছে।
প্র: হাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার চ্যালেঞ্জটা তাহলে কি ছিল?
উ: প্রি প্রোডাকশনটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমাদের কোন রেফারেন্স ছিল না। সমুদ্রে আমরা আগেও শ্যুট করেছি কিন্তু সেটা ছিল তীরের আশেপাশে। মাঝ সমুদ্রে শ্যুট করলে কি হতে পারে সেটা নিয়ে আমাদের আইডিয়া ছিল না। আমাদের প্রত্যেককেই প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়েছে। আমাদের কয়েকজন ডাক্তার বন্ধুবান্ধবদের সাথে পরামর্শ করে নেই যে স্বাস্থ্যগত কি কি ঝুঁকি থাকতে পারে। ওরা বললো যে মাথাব্যথা হতে পারে, কারো কারো বমি হতে পারে। সেগুলো আমরা নোট করে কি কি ওষুধ লাগবে সেগুলো নিয়ে নিছি। এর বাইরে আমাদের একজন সাইক্রিয়াটিস্ট বন্ধু ছিল। ওর সাথে পরামর্শ করলাম। সে বললো যে আপনারা যেহেতু অনেকদিন একসাথে থাকবেন এতগুলো লোক একটা জায়গায়, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই আপনাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হবে। এটা খুব স্বাভাবিক। তো ঝগড়া থামাতে মাঝখানে কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। তো আপনারা গ্রুপ ভাগ করে ফেলেন, কোন গ্রুপে ঝগড়া হলে কে এগিয়ে যাবেন…
প্র: রেফারি সেট করা..
উ: একদম। আমরা জানতাম গ্রুপ এ তে ঝগড়া হলে সেখানে আমি যাব, গ্রুপ বি-তে শিবলু ভাই, গ্রুপ সি-তে হলে আনিকা যাবে। আমরা এভাবে ভাগ করেই নিয়েছিলাম। আমাদের মধ্যে ঝগড়া লাগবেই আমরা নিশ্চিত ছিলাম, এবং সেটা হয়েছেও। কিন্তু সেটার জন্য আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি ছিল।
প্র: মানে একজন প্রোডিউসারকে সবকিছু নিয়েই নামতে হবে। সব প্রস্তুতি নিয়েই তাকে শুটিংয়ে যেতে হয়।
উ: হ্যা। আরো একটা পয়েন্ট আমাদের সেই সাইক্রিয়াটিস্ট বন্ধু বলেছিলেন। আমরা যেন ১০ দিন পর পর সেন্ট মার্টিনে নতুন কাউকে নিয়ে যাই দাওয়াত দিয়ে। ফ্রেশ কোন ফেইস। যারা আমাদের পরিচিত, যাদেরকে দেখে নতুন করে কথা বলার আগ্রহ জাগে। তো আমরা শোয়েব ভাই, রুশো ভাই, স্নেহাদ্রি, টিটু ভাইকে বলে রাখছিলাম যে আপনারা আসবেন তবে একসাথে আসবেন না ভাগে ভাগে আসবেন। ওনারা যখন আসতেন তখন পরিবেশটা পাল্টে যেত। ঈদের সময় বাড়িতে আত্মীয় স্বজন আসলে যেরকম খুশি লাগে সেরকম লাগতো। শুটিং শেষে রাতভর আড্ডা হতো।
প্র: শুটিং কতদিনের ছিল?
উ: সেন্ট মার্টিনে আমরা টানা ৪৫ দিন ছিলাম। শুটিং হয়েছে ৩৩ দিন সব মিলিয়ে। এর মধ্যে ঘূর্নিঝড় বুলবুল এর জন্য শুটিং ছয় দিন বন্ধ ছিল। আর প্রতি ছয় দিন পর পর আমরা একটা বিরতি নিতাম, সাপ্তাহিক ছুটির মত করে।
প্র: একটা ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে একজন পরিচালক অনেকাংশে তার প্রোডিউসারের উপর নির্ভর করেন..
উ: …সিনেমার ক্ষেত্রে আমি বলবো শুধু পরিচালক-প্রোডিউসার না, আসলে সবাই সবার উপর নির্ভরশীল। একটা ফুটবল টিমের মত। সবাইকেই সবার দরকার। একা কেউ কিছু করতে পারবে না।
প্র: একজন প্রোডিউসারের টিমে কারা কারা থাকেন? প্রোডাকশন টিমটা কাদের নিয়ে তৈরি হয়?
উ: লাইন প্রোডিউসার, অ্যাকাউন্টস, প্রোডাকশন ম্যানেজার, লোকেশন ম্যানেজার এরা একদম বেসিক। এরা না থাকলে আমি একা কাজ করতে পারব না।
প্র: আপনি ফিল্মের উপর অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া করেছেন। সেই বয়সে এই সিদ্ধান্ত নেয়াটা তো কঠিন যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি দেখি।
উ: আমি আসলে গিয়েছিলাম বিবিএ পড়তে। তারপর আমি আরেকটা কোর্স করি হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট। আমার রান্নাবান্নার খুব শখ এবং আমি আসলেই ভালো রান্না করতে পারি। আমাদের অফিসের সবাই বেশ ভালো রান্না করতে পারে। একদিন খাওয়াবো নে। তো সেই কোর্স করতে গিয়ে বিভিন্ন রকম সিনেমা দেখাতো। সেখানে লোকাল ডিরেক্টররা আসতো তাদের ছবি নিয়ে কথা বলতো। আমার আগে থেকেই ছবি দেখার অভ্যাস ছিল। কিন্তু তখন ছবিগুলো দেখতে দেখতে আমি ছবির ভেতরে ঢুকি, মানে বিস্তারিতভাবে বোঝার চেষ্টা করি। সেখান থেকে আগ্রহ তৈরি হয় এরপর আমি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডাকশনের উপর ছোট একটা কোর্স করি। ওটা করে আমি বুঝতে পারি যে আমি এদিকেই ক্যারিয়ার গড়বো।
প্র: আপনার কি ডিরেকশনের দিকে যাওয়ার কোন পরিকল্পনা আছে?
উ: ওরকম কোন পরিকল্পনা নেই। আমার মনে হয় যে ডিরেক্টর হওয়ার জন্য যে ক্যাপাবিলিটি থাকা দরকার সেটা আমার মধ্যে নাই। কারণ ডিরেক্টরকে অনেক কিছু জানতে হয়। অনেক কিছু পড়তে হয়। আমি অনেক পড়ি, কিন্তু তাও মনে হয় এটা যথেষ্ট নয়।
প্র: আপনি বিজ্ঞাপন এবং চলচ্চিত্র দুটি মাধ্যমেই নিয়মিত কাজ করেছেন। আপনার কাছে এই দুই মাধ্যমের পার্থক্য কি মনে হয়েছে?
উ: দুইটার মধ্যে অনেক পার্থক্য। একটা বিজ্ঞাপন আমরা ১০ দিনের প্রস্তুতিতে করে ফেলতে পারি। অল্প ব্যাপ্তির গল্প। কিন্তু সিনেমা অনেক বড় একটা ব্যাপার। সিনেমার মধ্যে ঢুকতে হয়। আপনাকে সিনেমার মধ্যে বাস করতে হবে। আমার কাছে অনেক সিনেমার অফার আসে। কিন্তু আমি স্ক্রিপ্ট পড়েই খারিজ করে দেই। কারণ স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয় না, আর যেগুলো পছন্দ হয়, সেগুলো বলে তিন মাস পরে শুটিং। আমি এত অল্প সময়ে সিনেমা করতে পারি না। অনেকেই পারবে কিন্তু আমাদের যে স্কুলিং, মানে সুমন ভাই আমাদের যেভাবে শিখিয়েছেন তাতে তিন মাসের মধ্যে শুটিং করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।
প্র: সুমন ভাইয়ের সাথে আপনার বোঝাপড়াটা কেমন? গিয়াসউদ্দিন সেলিমের সাথে কাজ করার পর আপনি সুমন ভাইয়ের সাথে কাজ করা শুরু করলেন..
উ: হ্যা, ১০ বছর হয়ে গেছে।
প্র: সুমন ভাইয়ের সাথে আটকে গেলেন কীভাবে?
উ: আমরা যারা প্রথমদিকে সুমন ভাইয়ের সাথে কাজ করা শুরু করেছি, আমরা কেউই আসলে বের হতে পারি নাই। সবাই আটকে গেছি। সুমন ভাই তো শুধু বস নন, টিচার এবং বন্ধুও, তো ওনার সাথে কাজ করে একটা কমফোর্ট আছে।
প্র: সুমন ভাইয়ের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জটা কি থাকে?
উ: নিজেকে রেগুলার আপডেট করতে হয়। সুমন ভাই নিজেও পড়াশোনা করেন, অনেক কিছু দেখেন। তো উনি কিছু একটা বললে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তো নিজেরও সেটা পড়া বা দেখা থাকতে হয়। ভালো বা খারাপ কেন লেগেছে সেটা বলতে হয়। জানা না থাকলে তো কিছু বলতে পারবো না।
প্র: বাংলাদেশের সিনেমায় পরান এবং হাওয়া দিয়ে যে নতুন একটা পরিবর্তন এসেছে, এই সময়টাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
উ: একটা খুব সুন্দর একটা টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। একদিনে হবে না হয়তো আরও ১০ বছর সময় লাগবে। এই সময়টা বলে দেয় যে আপনি আপনার গল্পটা বলতে পারবেন। এটা আমার কাছে পজিটিভ মনে হয়েছে। তবে অনেক সিনেমা লাগবে, একটা পরান, হাওয়া বা রেহানা মরিয়ম নূর দিয়ে হবে না। এরকম ছবি বছরে পাঁচ, দশটা লাগবে। দর্শকের হলে আসার জন্য একটা উৎসাহ থাকতে হবে। হলে গিয়ে ছবি দেখাটাকে জীবনের অংশ করে ফেলতে হবে। যেমন: আমরা যখন ভারতে বা অন্যান্য দেশে যাই দেখি যে সেখানে ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ছবি দেখাটা তাদের সংস্কৃতির একটা অংশ। আমাদের শহুরে জীবনে ছুটির দিনে খাওয়া ছাড়া আর কোন সংস্কৃতি নেই। আমরা পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই, ভালো একটা খাবার খাওয়ার জন্য জ্যাম ঠেলে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে যাই। যখন দর্শকদের মনে হবে যে সিনেমাটা দেখতেই হবে তখন তারাও নিয়ম করে হলে যাবে।
প্র: একজন এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসারের কাজ শুরু হয় রিসার্চ বা স্ক্রিপ্ট থেকে আর তার কাজ শেষ হয় কোথায়? কখন একজন প্রোডিউসার একটা ছবি থেকে বের হয়ে আসতে পারেন?
উ: কখনোই না। একজন প্রোডিউসার কখনো তার সিনেমা থেকে বের হয়ে আসতে পারেন না। এটা একটা নেভার এন্ডিং জার্নি। নিজের ক্ষেত্রে যদি বলি আমি এখনও দেবীর জন্য কল পাই, যে ওই টাকাটা পেয়েছেন কিনা, বা কোন ফেস্টিভ্যালে ছবিটা পাঠাতে হবে..একটা ছবির কোন শেষ নাই। একজন ডিরেক্টর হয়তো ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শোতে তার জার্নি শেষ করলেন বা যখন এডিটটা লক হয়ে গেল তখন তার কাজ শেষ হয়ে গেল। কিন্তু এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসারের কাজ কখনো শেষ হয় না সিনেমার জন্য। চিন্তা করেন, যদি ১০ বছর পর কেউ হাওয়া বা দেবী ছবিটা দেখাতে চায় তারা কিন্তু আমাকেই ফোন দেবে। তাই আমার আসলে ছবি থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নাই। সব সময় ছবির সাথেই থেকে যেতে হয়।
প্র: এই মুহূর্তে বাংলাদেশে যারা কাজ করছেন, তাদের মধ্যে আপনার পছন্দের এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার কে বা কারা?
উ: এষা, এষা ইউসুফ। আমার ভয়ংকর পছন্দের। আমার মনে হয় এষা হচ্ছে সুপার ওম্যান। ও যে কোন কিছু করে ফেলতে পারে। আমার ইন্সপায়রেশন বলতে পারেন, এষা যেরকম করে কাজ করে আমি সেভাবে করতে চাই। ও আমার ভালো বন্ধু।
প্র: এর বাইরে? নতুন কেউ যারা ভালো করছে বা মনে হচ্ছে সামনে খুব ভালো করবে?
উ: বাবু ভাই। রেহানা মরিয়ম নূরের প্রোডিউসার এহসানুল হক বাবু ভাই।
প্র: বাংলাদেশে প্রোডিউসার হিসেবে নতুন যারা কাজ করতে চায়, আপনার কি মনে হয় তাদের জন্য এখানে একটা নিশ্চিত ক্যারিয়ার আছে?
উ: কিছু কিছু ভুল ধারণা আছে, অনেকে না বুঝে চলে আসে। ইপি মানে কিন্তু শুধু প্রোকিউরমেন্ট বা ম্যানেজমেন্ট নয়, যেটা আগে বলছিলাম, এর সাথে ক্রিয়েটিভিটি খুব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ আপনাকে প্রচুর ক্রিয়েটিভ কলস নিতে হবে, আর সেজন্য আপনার প্রচুর পড়া থাকতে হবে, জানা থাকতে হবে। একটা উদাহরণ দেই, আমরা যখন হাওয়া নিয়ে কাজ শুরু করি তখন আমাদের টিমের সবাইকে অন্তত ৩০/৪০ টা করে বই পড়তে হয়েছিল। একদম লিস্ট ধরে ধরে। আমি দেখলাম যে এর অর্ধেক বই আমার পড়া আছে। তো নতুন যারা আসতে চায় তাদের সেই পড়াশোনাটা থাকতে হবে, তাহলে তারা নিজেদের জায়গাটা করে নিতে পারবে। তখন আর ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে সমস্যা হবে না।
প্র: ইউনিটে একজন প্রোডিউসারের ভূমিকা কি থাকে শুটিংয়ের সময়?
উ: অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করে যে আমি আসলে শুটিংয়ের সময় কি করি? আমি আসলে বসে থাকি। আমি দেখি যে কোনো ঝামেলা হয় কিনা। যেহেতু আমাদের সবকিছু প্রি-প্ল্যানড থাকে, আমরা জানি যে কখন কি হতে পারে, এর মধ্যে যদি কোনো একটা কাজ ঠিকমত না হয় তখনই আমার কাজ শুরু হয়। আমাকে সেই সমস্যাটার সমাধান করতে হবে। কিন্তু সমস্যাটা যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করার জন্যই আমরা থাকি। যদি আমাকে দেখেন শুটিংয়ে আমি কাজ করছি তার মানে বুঝবেন আমি পেছনে কোনো একটা ঝামেলা করে এসেছি, সেটাই শুটিংয়ে এসে ঠিক করছি।
প্র: আপনার ক্যারিয়ারে কি এমন কোন মুহূর্ত ছিল যে মনে হয়েছিল যে সবকিছু গড়বড় হয়ে যাবে?
উ: না, এখনও পর্যন্ত বড় কোন গড়বড় করিনি। আমি সবকিছু পেপারে দেখায় বিশ্বাসী। হচ্ছে, হয়ে যাবে না, একদম লিস্ট করা থাকতে হবে। এখন দেখি অনেকেই প্রোপার পেপারওয়ার্ক করতে চায় না। কিন্তু আমার পছন্দ প্রত্যেকটা ডিটেইলস লিখে ফেলা, ব্রেক ডাউন করা, টিমের সাথে শেয়ার করা। এইভাবে করলে ঝামেলা হওয়ার কথা না।
প্র: নতুন ডিরেক্টরদের মধ্যে কাদের কাজ আপনার ভালো লাগে?
উ: তানভীর, তানভীর আহসান। ওনাকে খুব পছন্দ আমার। সুকর্ণ শাহেদ ধীমান। শাওকী, অনীম, এরা সবাই সুন্দর কাজ করছে।
প্র: আপনি যখন একজন ডিরেক্টরের কাজ দেখেন, আপনি কোন দিক থেকে বিচার করেন? টেকনিক্যাল দিক থেকে?
উ: না, টেকনিক্যাল দিক আমি একদমই দেখি না। আমাদের বড় ভাইরা একটা কথা বলেন যে, কলম কখনও কবিতা লেখে না। কবিকেই কবিতাটা লিখতে হয়। আমি দেখি যে গল্পটা কতোটা বলতে পেরেছে। স্টোরি টেলিংটা ঠিকমত হয়েছে কিনা। আর কিচ্ছু না। কারণ ক্যামেরা কম দামী হতে পারে, আর্ট খারাপ হতে পারে। এগুলো ভালো হলে অবশ্যই ভালো। এটা অবশ্যই ভ্যালূ অ্যাড করবে। তবে সবার আগে গল্প বলতে পারাটা জরুরি।
প্র: আপনার যেমন ফিল্ম প্রোডাকশনের উপর একটা অ্যাকাডেমিক পড়ালেখা আছে। আপনার কি মনে হয় এটা থাকলে সুবিধা হয় কিনা?
উ: না থাকলেও সমস্যা নাই কিন্তু থাকলে কাজে দেয়। ওই যে বললাম যে আমি এখনো বড় ধরণের কোন গড়বড় করিনি শুটিংয়ে, কারণ আমি স্ট্রাকচারালি কাজ করি। নিয়ম মেনে সাজাই সবকিছু। অনেকে এটাকে ওল্ড স্কুল প্র্যাকটিস বলতে পারেন, যে প্রত্যেকটা ডিটেইল আমি লিখে রাখি, চোখের সামনে দেখতে চাই। কিন্তু আমি এভাবে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, শুটিংয়ের আগে আমার ব্লুপ্রিন্ট লাগবে নাহলে আমি শুটিংয়ে যাই না।
প্র: আপনি অস্ট্রেলিয়াতে যা পড়েছেন বা যেই ধরণের ফরম্যাটে কাজ করা শিখেছেন সেটা দেশে এসে যখন কাজ শুরু করেছেন তখন তো এতো গোছানো পাননি, আপনার নিজেকেই একটা ফরম্যাট তৈরি করতে হয়েছে। সেটা কি এখন প্র্যাকটিসে পরিণত হয়েছে?
উ: হ্যা, শুরুতে যেটা ছিল কেউ এত কেয়ার করতো না। কিন্তু এখন বদল হয়েছে, যেমন এখন সবাই ওয়েদার ফোরকাস্ট নিয়ে রাখে। শুটিংয়ের দুই দিন আগের আর দুই দিন পরের ওয়েদার রিপোর্ট দেখে নেয়া, দুই মিনিটের কাজ। এটা আপনার সাথে থাকতে হবে। ছোট ছোট টিম করে কাজ ভাগ করে দেয়া, জোন ভাগ করা এগুলো এখন কাজে লাগানোর প্র্যাকটিস শুরু হয়েছে।
প্র: আপনার পছন্দের সিনেমা…
উ: এটা তো কোটি কোটি…
প্র: আচ্ছা, এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, এই পাঁচ মিনিটের ভেতর যদি বলতে বলা হয়…যে কোনো কিছু, দেশি বা বিদেশি..
উ: এখন মনে পড়ছে… শেষ যে ছবিটা দেখলাম লা হাইনে, ফ্রেঞ্চ একটা ছবি। এথেনা নামের একটা ছবি একজন রিকমেন্ড করেছিলেন। এথেনা দেখে আমি লা হাইনে দেখি। দুর্দান্ত! এছাড়া আমাদের বড় ভাইরা তো আছেনই, তাদের ছবি ভালো লাগে, সুমন ভাইয়ের ছবি, সাদ ভাইয়ের ছবি আমার খুব পছন্দ।
প্র: প্রোডিউসার হিসেবে আপনার সিনেমার জার্নিটা শুরু হয় কোথা থেকে?
উ: একদম শুরু থেকে, স্ক্রিপ্ট থেকেই, একটা ইন্টারেস্টিং ঘটনা বলি, আমি তখন দেবী ছবির শুটিং করছি, অনেক রাতের বেলা উত্তরায়। তখন সুমন ভাই কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, শিমুল, শুটিং কি শেষ? আমি বললাম, না সুমন ভাই চলতেছে। সুমন ভাই বললেন, থাকো, আসতেছি। সুমন ভাই আর জাহিন চলে আসে উত্তরায়, আমাকে হাওয়ার গল্পটা শোনায়। গল্প শুনে আমি সাথে সাথেই বললাম, হয়ে গেছে ভাই। গল্প পেয়ে গেছি আমরা! তো এভাবেই শুরু হয়, তারপর তিন, চার, পাঁচ বছর চলে যায় একটা ছবির সাথে। ২০১৭ তে হাওয়ার গল্প শুনেছি, সেটা রিলিজ করতে পেরেছি ২০২২-এ।
প্র: আমাদের ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় ক্যামেরার পেছনে নারীরা কতোটা সম্পৃক্ত হচ্ছে? আপনার অভিজ্ঞতা কি বলে?
উ: আগে কম ছিল, কিন্তু এখন অনেকেই আসছেন। আমাদের কস্টিউম ডিপার্টমেন্ট তো পুরোটা মেয়েরাই দেখছে। প্রোডিউসার হিসেবে এষা তো আছেই, এর বাইরে আমাদের মৌ আপু আছেন, হাফ স্টপ ডাউনের মৌ আপু, তারপরে মৌমিতা, স্বর্ণা আছে, নোভা ফিরোজ আছে। সংখ্যাটা কম না এবং তারা সবাই খুব সুন্দর কাজ করছেন। আরও আসলে আরও ভালো হবে। মেয়েরা যত আসবে আমরা তত সভ্য হবো।
প্র: ছবি নিয়ে আপনার পরবর্তী পরিকল্পনা কি?
উ: রইদ নামে আরেকটা ছবি আসছে আমাদের। এখনো কাজ শুরু হয়নি, প্রস্তুতি চলছে, স্ক্রিপ্টের ফার্স্ট ড্রাফট শেষ হয়েছে। এটা সরকারি অনুদানের ছবি। আমাদের আর জয়া আপুর যৌথ প্রোডাকশন হবে, সুমন ভাই ডিরেকশন দেবেন। আর ধীমানের জন্য ফেউ নামের একটা সিরিজ নিয়ে কাজ করছি। কার সাথে করবো সেটা এখনও কনফার্ম না কিন্তু করবো সেটা জানি।
প্র: রইদ অনুদানের ছবি, দেবী-ও অনুদানের ছবি ছিল। অনুদানের ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন আপনার?
উ: ভালো। অনুদানের ছবিতে কাজ করে দেখেছি, শর্ত মেনে আপনি নির্দিষ্ট সময়ে রাশ জমা দিলে, তারা টাকাটা ছেড়ে দেয়। ধাপে ধাপে নিয়ম মেনে কাজ হয়, কোনো দিক থেকে কোনো ঝামেলা নেই, যদি আমরা ঠিকঠাক মত কাজটা জমা দিতে পারি।
প্র: সব মিলিয়ে তাহলে এখন আপনার ঝুড়িতে সিনেমা দুটি, দেবী আর হাওয়া?
উ: আরেকটা ছবি করেছিলাম, চরকির জন্য, অ্যান্থোলোজি ফিল্ম, এই মুহূর্তে। সে হিসেবে তিনটা।
প্র: ফিল্ম নিয়ে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চায়, হোক সেটা ক্যামেরার সামনে বা পেছনে আপনার অভিজ্ঞতা থেকে তাদের জন্য কি পরামর্শ থাকবে?
উ: আগেই বলেছি, পড়ে আসতে হবে, দেখে আসতে হবে, চিন্তা করতে হবে, ভাবনাটা খোলা রাখতে হবে এবং একটা ধারাবাহিকভাবে করে যেতে হবে।
প্র:আপনি অনেক বছর ধরে কাজ করছেন কিন্তু নতুন যারা প্রোডিউসার হিসেবে কাজ করতে আসছেন তাদের হয়তো শুরুতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, হয়তো অনেক সময় অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে তো তারা হয়তো চাপ বোধ করে।
উ: হ্যা, তবে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের একটা সংগঠন রয়েছে। আমরা এর নাম দিয়েছি বাপ! Bangladesh Association of Advertising Producers! প্রোডিউসারদের কারো কোন সমস্যা, অভিযোগ থাকলে আমরা সবাই মিলে সেটা সমাধানের চেষ্টা করি।
প্র: বাপের নেতৃত্বে কারা আছেন এখন?
উ: কনভেনর হচ্ছেন তারেক ভাই, হাবিবুর রহমান তারেক, রান আউটের। আর জয়েন্ট কনভেনর হচ্ছেন মৌ আপু, মাহজাবিন রেজা চৌধুরী, হাফ স্টপ ডাউনের।
১৩ অক্টোবর, ২০২২, বৃহস্পতিবার।
ফেইসকার্ড অফিস, নিকেতন, গুলশান।