মাজরুহ সুলতানপুরী
মাজরুহ সুলতানপুরী, নামটা সবার কাছে খুব একটা চেনা নয়। চলুন এই ব্যক্তিকে চেনার চেষ্টা করা যাক। তাঁর আসল নাম ছিল আসরার উল হাসান খান। ভারতে জন্ম নেয়া এক উর্দু কবি। তাঁর কবিতা পড়া হয়নি কিন্তু তাতে সমস্যা নেই। তাঁকে চিনতে হলে তাঁর লেখা গানগুলোই যথেষ্ট। মাজরুহ সুলতানপুরীর লেখা আমার পছন্দের গানের তালিকা নিচে দিয়ে দিচ্ছি। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, গানের তালিকা দেখে অবাক হবেন, এত চমৎকার সব গান একজন ব্যক্তির লেখা!
প্রায় ছয় দশকের ক্যারিয়ার মাজরুহ সুলতানপুরীর। তাঁর জন্ম হয়েছিল ব্রিটিশ শাসিত ভারতের উত্তর প্রদেশে। তাঁর পাঠান বাবা ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার। মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন তিনি, পরে ইউনানী চিকিৎসাবিদ্যায় লেখাপড়া করে হাকিম হিসেবে কাজ শুরু করেন। লেখার ঝোঁক ছিল, তাই হাকিম হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি গজলও লিখতে থাকেন। বিভিন্ন মুশায়রাতে (কবিতা পাঠের আসর) তিনি নিজের লেখা গজল পাঠ করে প্রশংসিত হতে থাকেন। হাকিমের কাজ ছেড়ে তিনি এবার লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন।
এক মুশায়রাতে অংশ নিতে তিনি মুম্বাই যান। সেই আসরে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত প্রযোজক এ.আর. কারদার। তিনিই আবিষ্কার করেন মাজরুহকে। যদিও মাজরুহ প্রথমে সিনেমার গান লেখার বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না। পরে কারদার সাহেব তাঁকে নিয়ে যান আরেক কবি জিগার মোরাদাবাদির কাছে। জিগার, মাজরুহকে বোঝান যে, সিনেমায় গান লিখলে ভালো টাকা পাওয়া যাবে। এরপর পরীক্ষার জন্য মাজরুহকে কম্পোজার নওশাদের কাছে নিয়ে যান কারদার। নওশাদ একটা সুর দিয়ে মাজরুহকে বলেন গানের কথা লিখতে। মাজরুহর লেখা পছন্দ হয় নওশাদের। আর শুরু হলো হিন্দি সিনেমার মাজরুহ যুগ। ১৯৪০ এর দশকের মাঝামাঝি শুরু। মাজরুহ তাঁর অসাধারণ গীতিকবিতা দিয়ে দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। মোহাম্মদ রাফি, কিশোর কুমার, আশা ভোসলে, লতা মুঙ্গেশকার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে হরিহরণ, অলকা ইয়াগনিক পর্যন্ত মাজরুহর লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
মাজরুহ সুলতানপুরীর লেখা কিছু গান
• ক্যায়া হুয়া তেরা ওয়াদা, ও কসম, ও ইরাদা
• লেকে পেহলা পেহলা পেয়ার
• আপনা দিল তো আওয়ারা
• অ্যায়সে না মুঝে তুম দেখো
• পেহলা নাশা
• পাপা ক্যাহতে হ্যায় বাড়া নাম কারেগা
• বাচনা অ্যায় হাসিনো
• চান্দ মেরা দিল, চান্দনি হো তুম
• চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে জো দিলকো
• দিল দেকে দেখো
• বারবার দেখো, হাজারবার দেখো
• ছোড় দো আচল, জামানা ক্যায়া কাহে গা
• বাহো কে দারমিয়া (পণ্ডিত যতিনের সাথে যৌথভাবে)