ইয়ে কালি কালি আখে: এলোমেলো গল্পে খেই হারানো সিরিজ

তাহির রাজ ভাসিন, শোয়েতা ত্রিপাঠি, সৌরভ শুক্লা এর মত অভিনেতারা যেখানে অভিনয় করেছেন সেই ওয়েব সিরিজ নিয়ে প্রত্যাশা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গল্পের এমন দুরবস্থা যে সিরিজটা শেষ পর্যন্ত দর্শকদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়েছে।

প্রথম দুই এপিসোড ঠিকঠাক ছিল। শুরুতে গল্প এবং ডায়লগ বেশ ইন্টারেস্টিং ছিল। তারপরই খেই হারানো শুরু। গল্প যে এরপর কোথা থেকে কোথায় চলে গেছে কেউই জানে না। ছোট গল্পকে টেনে বড় করতে গিয়েই হয়তো এই হাল। গল্পটা সিরিজে না বলে আড়াই ঘণ্টার একটা মুভিতে আরামসে বলে দেয়া যেত। কিন্তু সেটাকে অযথা টেনে অযাচিত সাব প্লট তৈরি করতে গিয়েই যত ভেজাল।

কিছু ত্রুটি এবং স্পয়লার

প্রথমত ভিক্রান্ত তার স্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে কোন লুকোচুরি ছাড়াই। ডার্ক ওয়েবে ভাড়াটে খুনি খোঁজা, খুনির সাথে কথা বলা সব সে তার ফোন দিয়ে করছে। তার স্ত্রী পূর্বা যদি খুন হয়েও থাকে ভিক্রান্তের কল লিস্ট ধরেই পুলিশ সব রহস্য সমাধান করে ফেলতে পারবে।

তারপর আখেরাজ যে পুলিশের এসএসপিকে খুন করেছে সেটা কোন তথ্যের ভিত্তিতে টিভিতে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে প্রচার হলো তার কোন ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। ভিক্রান্ত কোন এক চিরকুট পৌঁছে দিয়েছে তাতেই ব্রেকিং? কোন কিছু যাচাই না করে ব্রেকিং চালিয়ে দেয়া হল তারপর পুলিশ এতদিন পর গিয়ে এসএসপির শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ নদীর কিনারে খুজে পেতে লাগলো!

পূর্বার হাত থেকে বাঁচার জন্য ভিক্রান্তের আপ্রাণ চেষ্টাকে দেখাতে গিয়ে নানারকম গাঁজাখুরি গল্প ফাঁদা হয়েছে। যেমন: পূর্বাকে মারার জন্য খুনিকে ৭০ লাখ টাকা দিতে হবে। সেই টাকা ভিক্রান্ত আদায় করে আখেরাজের টাকার গোডাউন থেকে। যেটা তার বাবা যে কিনা আখেরাজের অ্যাকাউন্টেন্ট সে চুরি করে আনে।

সে আখেরাজের এতদিনের অ্যাকাউন্টেন্ট অথচ সেখানে যে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে এবং সেখানে তাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সেটা সে বেমালুম ভুলে গেছে। যখন পূর্বা তাকে জিজ্ঞেস করে সে সেখানে গিয়েছিল কিনা সে কনফিডেন্টলি অস্বীকার করে অথচ সিসিটিভি ফুটেজে তাকে পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। আবার ছেলের অনুরোধে টাকা চুরি করতে বাবার রাজি হওয়াটাও এক হাস্যকর দৃশ্য। ছেলের ইমোশনাল কথায় সে রাজি হয়ে যায় অথচ নিজের পরিবারের নিরাপত্তার কথা একবারও ভাবে না!এরকম নানারকম অসামঞ্জস্য নিয়ে গল্প এগিয়েছে। যা একসময় দর্শকের চরম বিরক্তির উদ্রেক করে।

এবার আসা যাক অভিনয়ে। সৌরভ শুক্লা যথারীতি ভালো অভিনয় করেছেন। তাহির রাজ ভাসিন কিছুটা ম্লান ছিলেন। শোয়েতা ত্রিপাঠির অভিনয় পাতে তোলার মত হয়নি। পূর্বার চরিত্রে আঁচল সিং যথেষ্ট ভালো করেছেন। ভিক্রান্তের বন্ধু গোল্ডেন এর চরিত্রে অনন্ত জোশি ফাটিয়ে দিয়েছেন। পার্শ্ব চরিত্র হলেও তিনি একই ছন্দে অভিনয়টা করে গেছেন। বাদবাকি সবার অভিনয় অ্যাভারেজ। শেষদিকে অরুণোদয় সিং কিলারের চরিত্রে কিছুটা চমক দেয়ার চেষ্টা করেছেন বটে তবে সেটাও জমেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *